সম্মোহনবিদ্যা/হিপ্লটিজম/হিপনোসিস/HYPNOTISM
সম্মোহনবিদ্যাকে(HYPNOTISM-হিপ্লটিজম)এক হিসেবে
কলা-বিদ্যা(Arts) বলা চলে।এর প্রভাবে যে কোন মানুষকে সম্মোহনকারী তার নিজের ইচ্ছামত যে কোন কাজ
করিয়ে নিতে পারেন।আদি বা প্রাচীনকাল থেকেই সম্মোহনবিদ্যাকে মানুষ বিভিন্ন কাজে
লাগাচ্ছে।
তখন এর ব্যবহার ছিল দৈবিক ক্ষমতা,যাদুবিদ্যা,অলৌকিক
ঘটনা হিসেবে।কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে সম্মোহনবিদ্যাকে জানবার চেষ্টা
চলছে।
হিপ্লটিজম বা সম্মোহনবিদ্যা আরম্ভ করেন
অষ্ট্রিয়ার-ভিয়েনা শহরের এক ডাক্তার তাঁর নাম ছিল “ফ্রাণ্ডস আন্টন মেজমার”(১৭৩৩-১৮১৫)।ডাক্তার
মেজমারের নাম অনুসারে হিপ্লটিজমকে বহুকাল পর্যন্ত মেজমাইরজম বলা হতো।
স্কটল্যান্ডের ডাক্তার জেমস ব্রেড ১৮৪০
খ্রিস্টাব্দে “হিপ্লটিজম” শব্দটা প্রথম ব্যবহার করেন।হিপ্লটিজম শব্দের উৎপত্তি
গ্রীক শব্দ হুপ্নস থেকে। গ্রীক হুপ্নস এর মানে হলো “ঘুম”।অবশ্য হপ্নস হলো গ্রীক
ঘুমের দেবতার নাম।
মূলতঃএকজনের চরম প্রস্তাবনা,তীব্র আবেগ ও কল্পনা শক্তি দ্বারা অন্যের মনকে প্রভাবিত করা এবং পরিচালনা করাকে বলা হয় হিপ্লটিজম বা হিপনোসিস।
সম্মোহিত
মানুষকে দেখলেই বোঝা যায় যে সে একটা আচ্ছন্ন তন্দ্রা অবস্থায় রয়েছে।আর
এই আচ্ছন্ন অবস্থাতে সম্মোহনকারী,সম্মোহিত বেক্তিকে দিয়ে নিজের মনমতো সব কাজ করিয়ে
নিতে পারে।ইচ্ছে না থাকলে সম্মোহিত হওয়া যায়না বলে এর জন্য সহযোগিতার প্রয়োজন
পরে।তাই সম্মোহন করার আগে সম্মোহনকারী ইচ্ছুক বেক্তিকে একটি অন্ধকার ঘরে বসিয়ে খুব
মৃদু স্বরে তাকে বার বার খুব আরাম করে বসিয়ে শরীলকে শিথিল করতে বলে।এরপর তাকে যে
কোন একটি জিনিসের দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে থাকতে বলে। বহুক্ষণ এভাবে চেয়ে থাকতে থাকতে
তার চোখ যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন সম্মোহনকারী তাকে চোখ বন্ধ করতে বলে আর তখনি সে
ঘুমে আচ্ছন্ন হয়।এই রকম অবস্থাতে সম্মোহনকারী তাকে নানা কথা বলে,নানা নির্দেশ
দেয়,আর সম্মোহিত অবস্থাতে যা বলা হয় সে সবকিছুই করতে থাকে।
সম্মোহিত হবার পড়ে একজন বেক্তি নিজেকে অন্ধ,কানা,ববা সব কিছুই ভাবতে
পারে,ঠাণ্ডায় ঠকঠক করে কাঁপতে পারে।সম্মোহিত করে তাকে দিয়ে এমন সব কাজ করিয়ে নেওয়া
যায় যা সে সদ্য অবস্থায় কখনো করতে পারেনা।সম্মোহিত অবস্থা থেকে স্বাভাবিক অবস্থাতে
ফিরে আসার পরে তার পক্ষে সে কি করেছে আর না করেছে কিছুই আর মনে করা সম্ভব হয় না।
বর্তমান সময়ে অনেক রকম রোগের চিকিৎসা জন্য হিপ্লটিজম প্রয়োগ করা হয়।
ইংল্যান্ডে ডাঃ এস ডেল
অবেদকের(এনাস্থিজিয়া) পরিবর্তে সম্মোহিত করে তাঁর রোগীদের দাত তুলতেন।এভাবে
তিনি ফুসফুসের ওপর অস্ত্রপচারও করেছেন।মনের উপর চাপ বা দুশ্চিন্তা হিপ্লটিজম করে
দূর করা যায়।