স্বর্ণ কেন এত
দামি?
মানবসভ্যতার
গোড়াপত্তনের কাল থেকে সোনা/স্বর্ণ হলো
ধনীদের
প্রতীক।যেখানে মূর্তি পূজা প্রচলিত সেখানে পুরো
মূর্তি অর্থাৎ
দেবীদেরকে স্বর্ণ দিয়ে তৈরি করা হয়।
সাধারণ মানুষসহ
শিল্পপতি এবং ঘড়ের গৃহবঁধুরা
স্বর্ণ বলতে
অজ্ঞান। বাংলাদেশে তো দিনকে দিন স্বর্ণের
খনি চোরাচালান
হচ্ছে!!!!!!কি আছে এই স্বর্ণে,কেন
মানুষ স্বর্ণের
জন্য এতো পাগল?আর কি কারণেই বা
এই স্বর্ণের দাম
দিনকে দিন বেড়েই চলছে???
আসুন জেণে নেই
স্বর্ণ সম্পর্কিত কিছু তথ্য .........
কতগুলো বিষয়ের উপরে
একটি বস্তুর দাম নির্ভর করে।
প্রথম
কারনঃ তার দুষ্প্রাপ্যতা
দ্বিতীয়
কারনঃ তার উপযোগিতা
তৃতীয়
কারনঃ তার সৌন্দর্য
চতুর্থ
কারনঃ প্রাকৃতিক উৎসতা অর্থাৎ প্রকৃতি থেকে
পাওয়া
সত্ত্বেও যার স্থাইত্তের সময়কাল বেশি।
উপরের সব গুনগুলোই
স্বর্ণে বিরাজমান।যেমনঃ
স্বর্ণ খুবই
দুষ্প্রাপ্য ধাতু, রং এবং উজ্জ্বলতায় এই ধাতুর
তুলনা হয়না,ঠাণ্ডা-গরম,পাণি-বাতাস
এসব কিছুতে স্বর্ণের
কোনকিছুই হয়না,এই
কারণেই স্বর্ণের দাম অনেক
বেশি হয়ে থাকে।
স্বর্ণ চকচকে হলুদ
রঙের একপ্রকারের ধাতু।পাওয়া যায়
খুব কম। স্বর্ণ
প্রাপ্তি মূলত দুটি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল।
এবং এই স্বর্ণ
পরিশুদ্ধ রূপে এবং অন্য মিশ্রিত পদার্থের
সাথে পাওয়া যায়।
মূলত স্বর্ণের উৎস
প্রাকৃতিক,এবং সেই উৎস হোল খনি।
খনি থেকে স্বর্ণ
তুলে আনা অনেক কষ্টসাধ্য ও ব্যায় বহুল।
অস্ট্রেলিয়ার
দক্ষিণ পূর্ব ভিক্টোরিয়া প্রদেশে একবাড় ৭০
কিলোগ্রাম ওজোনের খাঁটি
স্বর্ণের এক চাঙড় পাওয়া যায়।
তবে এরকম কাণ্ড
কালে ভদ্রে ঘটে।
স্বর্ণ খনি থেকে
খুব অল্পঅল্প করে সংগ্রহ করা হয়,
পরে তা প্রক্রিয়াজাত
করে ব্যাবহার উপযোগী করে
তোলা হয়।
সমুদ্রের তলদেশেও
স্বর্ণের অস্তিত্ব রয়েছে তবে
তা উঠানোর খরচ অনেক
বেশি তাই এই ক্ষেত্র থেকে
আপাতত স্বর্ণ সংগ্রহ
করা হয় না।
পৃথিবীতে স্বর্ণের
খুব অল্প অংশই গহনাগাঁটি তৈরিতে
ব্যাবহারকরা হয় যা
শতকরার দিক থেকে মাত্র ১০ ভাগ।
কিছু পরিমাণ স্বর্ণ
বিভিন্ন ওষুধ তৈরিতে ব্যাবহার হয়।
কিছু অংশ জমানো
হয়,আর বাদবাকি অংশ আন্তর্জাতিক
বাণিজ্যের লেনদের
কাজে ব্যাবহার হয়ে থাকে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ
চলাকালীন সময়ে(১৯১৪-১৯১৮) স্বর্ণ দিয়ে
বিভিন্ন দেশের
মুদ্রার বিনিময় চলতো।
স্বর্ণ এমন একটি
ধাতু যা অন্য কোন ধাতুর চেয়ে
নরম প্রকৃতির বিধায়
স্বর্ণকে সহজেই গলিয়ে,পুড়িয়ে বিভিন্ন
আকার দেয়া যায়।
স্বর্ণকে কাগজের চেয়ে
পাতলাও করাযায় এবং অন্য
ধাতুর উপর প্রলেপ ও
দেয়া যায়।
খাঁটি স্বর্ণকে
ব্যাবহারের উপযোগী করে তুলতে হলে অন্যকোন
ধাতুর সাহায্য নিতে
হয়।সাধারণ এসিডে স্বর্ণের কোন বিক্রিয়া ঘটেনা
একমাত্র “একোয়া রেজিয়া”
স্বর্ণকে গলাতে পারে।এটা তৈরি করা হয়
একভাগ
নাইট্রিক এসিড ও তিনভাগ হাইড্রক্লোরিক এসিড দিয়ে।
তবে স্বর্ণের মুল কাজ হল লকারের অন্ধকারে
আত্মগোপন করা।
মানুষ
অর্থসম্পদের মাধ্যম হিসেবে স্বর্ণকে নিজের কাছে এবং
লকারে
গচ্ছিত রাখে।এর মূলকারণ কাগুজে মুদ্রা বিভিন্ন ভাবে
নষ্ট
হতে পারে,কিন্তু স্বর্ণ চিরকাল টীকে থাকে।
বর্তমানে আফ্রিকা,রাশিয়া আর মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি
স্বর্ণ
উৎপাদন কারি দেশ।আমাদের প্রতিবেশী ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে
কিছু
স্বর্ণ পাওয়া যায়।